• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আদমদিঘী পাক হানাদারমুক্ত দিবস আজ


বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২১, ০৫:০১ পিএম
আদমদিঘী পাক হানাদারমুক্ত দিবস আজ

আজ (১২ ডিসেম্বর) বগুড়ার আদমদীঘি থানা পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুহুর্মুহু গেরিলা আক্রমণে পাক হানাদার বাহিনী পালিয়ে যাওয়ায় ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আদমদীঘি থানা সদরকে পাক হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেন। আদমদীঘি উপজেলার সেসময়ে সান্তাহার বৃহৎ রেলওয়ে জংশন ছিল পাক হানাদার বাহিনীর শক্তঘাঁটি। এই ঘাঁটি থেকে পাক হানাদাররা গোটা উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করতো। আদমদীঘি থানা এলাকায় পাক হানাদার বাহিনী এবং এ দেশীয় দোসর রাজাকারদের পাশাপাশি বিহারীদের অত্যাচার ছিল অবর্ণনীয়। ১৯৭১ সালের এপ্রিলের শুরু থেকেই বিভিন্ন গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যাসহ ধর্ষণের ঘটনাও ঘটিয়েছিল বিহারী ও পাক হানাদাররা।

সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহরে ৯ মাস কোনো বাঙালিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বাঙালি দেখামাত্রই চালানো হতো নির্মম নির্যাতন। প্রত্যেক বিহারীই ছিল অস্ত্রধারী।

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার এল. কে আবুল হোসেন, ফজলুল হক, আজিজার রহমান নান্টু, মেজর হাকিম, মুনছুর রহমান, নাজির হোসেন, আব্বাস আলীসহ অন্য যুদ্ধকালীন কমান্ডারদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদারদের সঙ্গে আদমদীঘির কুসুম্বী, রেল স্টেশন, নশরতপুর, মথুরাপুরের গাদোঘাট রেলওয়ে ব্রিজ, সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহর রানীনগনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে বেশ কয়েক জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। শুরু থেকে রক্তদহ বিল, বোদলা, পালসা, বিহিগ্রাম, বিষ্ণুপুর, গণিপুর, কদমা, বেজার, থলবড়বরিয়া গ্রাম ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদমুক্ত এলাকা। মুক্তিযোদ্ধাদের চারদিকের আক্রমণে পাক হানাদার বাহিনী পর্যুদস্ত হয়ে ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহরে পালিয়ে একত্রিত হয়। অবশেষে ওই দিন দুপুরে আদমদীঘি থানা সদরে বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে থানা সদরকে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

এর দুই দিন পর ১৪ ডিসেম্বর সান্তাহারে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ তীব্রতার কারণে সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহর থেকে পাক-হানাদাররা নওগাঁ অভিমুখে পালিয়ে যাওয়ায় সান্তাহার জংশন শহরমুক্তের মধ্য দিয়ে সমগ্র আদমদীঘি থানা হানাদারমুক্ত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস মহান মুক্তিযুদ্ধে এ উপজেলায় ২৫জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

এর মধ্যে শহীদ পুলক বিশ্বাসসহ অনেক শহীদ পরিবার তাদের সম্মানি ভাতাদি থেকে বঞ্চিত রয়েছে। শহীদ পুলক বিশ্বাসের ভাই উত্তম বিশ্বাস জানান, আদমদীঘি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, উপজেলা নির্বাহী অফিসে তার ভাইয়ের নাম শহীদ তালিকায় টাঙানো ও শহীদ পুলকের নামে সড়কে নামকরণ থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ নানা জটিলতা দেখিয়ে শহীদ পুলকের ভাতার সুরাহা এখনও করেননি।

Link copied!